দেশভিত্তিক উৎকর্ষ কার্যক্রম
স্কুল ও কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের মনের বিকাশ ও উৎকর্ষের লক্ষ্যে কেন্দ্রের প্রথম বড় কর্মসূচি এটি। ১৯৮৪ সালে শুরু হয়ে এ-পর্যন্ত কর্মসূচিটি পরিচালিত হয়েছে দুটি আদলে। প্রথম পর্বে (১৯৮৪-২০০২) এই কর্মসূচির আওতায় দেশের যেখানেই একসঙ্গে দু-তিনটি স্কুল ও দু-একটি কলেজ পাওয়া গিয়েছিল সেখানেই, ওই শিক্ষায়তনগুলোর সঙ্গে উপগ্রহের আদলে, এই কার্যক্রমের একটি করে শাখা গড়ে তোলা হয়েছিল। একজন সংস্কৃতিবান, যোগ্য ও উদ্যমশীল মানুষের নেতৃত্বে আলোকিত পরিবারের মতো করে গড়ে উঠেছিল এই শাখাগুলো। তারপর ওই শিক্ষায়তনগুলোর ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ- এই সাতটি শ্রেণির মেধাবী, প্রতিভাবান ও উদ্যম-উৎসাহসম্পন্ন ছাত্র-ছাত্রীদের খুঁজে এনে বছরের-পর-বছর ধরে ওই শাখায় তাদের সম্পন্ন মানুষ হিশেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে।
দু-ভাবে এই চেষ্টা চলছে : [১] সাত বছরে তাদের মন ও বয়সের উপযোগী প্রায় পৌনে দুশো শ্রেষ্ঠ বই পঠন-পাঠনের ভেতর দিয়ে (প্রতিবছর ১৬টি নিয়মিত ও ৯টি অতিরিক্ত বই)। বইপড়াকে উৎসাহিত করার জন্য ছিল বিপুল পরিমাণ পুরস্কারের ব্যবস্থা। [২] একটি আনন্দময় ও বহুমুখী সাংস্কৃতিক জীবনের ভেতর দিয়ে তাদের সুস্মিতভাবে বিকশিত করে তোলার মাধ্যমে। বইপড়ার মাধ্যমে ঘটেছে তাদের বুদ্ধিবৃত্তির বিকাশ, সাংস্কৃতিক কর্মসূচির ভেতর দিয়ে ঘটেছে হৃদয়বৃত্তির পরিশীলন। এভাবে জীবনের সূচনালগ্নেই তারা হৃদয়বান, মননশীল ও আনন্দময় মানুষ হিশেবে বিকশিত হবার সুযোগ পেয়েছে। ২০০২ সাল পর্যন্ত সারা দেশে এই কর্মসূচির শাখা ছিল ১১০০টি।
পট পরিবর্তন
২০০৪ সালে এসে দেশভিত্তিক উৎকর্ষ কার্যক্রম, হুবহু একই আদলে, স্কুল-কলেজের বাইরে থেকে স্থানান্তরিত হয়ে যায় স্কুল-কলেজের ভেতরে। শুরু হয় আলাদা আলাদা স্কুল-কলেজকে কেন্দ্র করে এই কার্যক্রম। স্কুল-কলেজগুলোর প্রধান শিক্ষক ও অধ্যক্ষ অভিভাবকত্বে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একজন যোগ্য ও সংস্কৃতিমনা শিক্ষক-অধ্যাপকের নেতৃত্বে নতুন চরিত্র নিয়ে শুরু হয় এটি। বর্তমানে দেশের ২১০০ স্কুল ও কলেজে কর্মসূচিটি চলছে। মোট পাঠকসংখ্যা ২ লক্ষ ১৭ হাজার।